তবুও শত্রু তিস্তাকে বন্ধু মনে করেই বেঁচে আছি

হাওর বার্তা ডেস্কঃ গাইবান্ধা সদর উপজেলার কামারজানি ইউনিয়নের গোঘাট এলাকা। যেখানে মানুষকে প্রতিনিয়ত নদী ভাঙনের সঙ্গে যুদ্ধ করে বেঁচে থাকতে হয়। সেখানকার ১ নম্বর গোঘাট এলাকায় বসবাস করে ৭৫টি জেলে পরিবার। এক সময় ছিল তাদের সাজানো সংসার, ছিল জমি-জমাসহ বাপ-দাদার স্মৃতি। কিন্তু বিগত কয়েক বছরে তিস্তার অব্যাহত ভাঙনে দিশেহারা জেলে পল্লীর মানুষগুলো। এখন ঠাঁই নেওয়ার মত জায়গা নেই তাদের। বাঁচার তাগিদে অনেকে আশ্রয় নিয়েছে অন্যের বাড়িতে আবার কেউবা সরকারি খাস জমিতে। সব মিলিয়ে চরম দারিদ্র সীমার নিচে বাস করছে এখানকার ৭৫টি জেলে পরিবারের অন্তত ৫ শতাধিক মানুষ।

সরেজমিনে, কামারজানি ইউনিয়নের গোঘাট এলাকায় তিস্তার পাড়ে গিয়ে দেখা হয় জেলে পল্লীর ভিটেমাটি হারা পঞ্চাশ বছরের লালমন দাসের সঙ্গে। নদীতে জাল ফেলানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে নিজে থেকেই বলতে শুরু করেন জীবনের চরম বাস্তবতার কথা।

সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আমার বাড়ি ছিল, জমি ছিল, ছিল সুন্দর একটি সাজানো সংসার। কিন্তু তিস্তার ভাঙনে এখন আর কিছুই নেই। বাঁচার জন্য আশ্রয় নিয়েছি অন্যের জায়গায়। তবুও শত্রু তিস্তাকে বন্ধু মনে করেই বেঁচে আছি। সকালে জাল নিয়ে বের হয়ে সারাদিন নদীতে মাছ ধরি আর সেই মাছ বিক্রি করেই সংসার চ‍ালাই। নদীই আমাদের পেট চালায়, নদী আছে বলেই অন্তত দু’বেলা-দু’মুঠো খেতে পারি। নদী না থাকলে না খেয়ে থাকা লাগত।

পাশের নৌকার রামকৃষ্ণ দাস (৪২) এগিয়ে এসে বলেন, আমার তিন বিঘা জমি ছিল, নদীতে মাছ ধরতাম আর জমিতে ধান-ভুট্টা চাষ করে ভালই চলত। তিস্তার ভয়াল স্রোত জমি-জামা, বাড়ি সবই ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। এখন সরকারি খাস জমিতে কোনমতো পরিবার নিয়ে বেঁচে আছি। নদীতে মাছ না ধরলে সংসার চলে না, ধার দেনা করে চলতে হয়। এখন নদীতে মাছের সংখ্যাও কম। তাই জালে মাছ ওঠে কম। খুব কষ্টের মধ্যে দিন কাটাচ্ছি।

সূত্রঃ বাংলানিউজ

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর